২০০৬ সনের ১৯নং আইন-
দেশের প্রতিটি ইউনিয়নের এখতিয়ারাধীন এলাকায়কতিপয় বিরোধ ও বিবাদের সহজ ও দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গ্রাম আদালতগঠনকল্পে প্রনীত আইনঃ
১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রবর্তন এবং প্রয়োগ :
(ক) এই আইন গ্রাম আদালত আইন, ২০০৬ নামে অভিহিত হইবে।
(খ) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
(গ) ইহা কেবলমাত্র ইউনিয়নের এখতিয়ারভূক্ত এলাকায় প্রযোজ্য হইবে।
২। সংজ্ঞা বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে এই আইনে -
(ক) ‘‘আমলযোগ্য অপরাধ’’ অর্থ ফৌজদারী কার্যবিধিতে সংজ্ঞায়িত Cognizable Offence;
(খ) ‘‘ ইউনিয়ন’’ অর্থ The Local Government (Union Parishads) Ordinance, 1983
(Ordinance no . LI of 1983) এরsection 2 এরclause (26) এ সংজ্ঞায়িত ইউনিয়ন:
(গ) ‘‘ইউনিয়ন পরিষদ’’ অর্থ The Local Government (Union Parishads) Ordinance,
1983(Ordinance no . LI of 1983) এরsection 2 এরclause (27) এ সংজ্ঞায়িত
ইউনিয়ন পরিষদ:
(ঘ) ‘‘ এখতিয়ার সম্পন্ন সহকারী জজ’’ অর্থ যে সহকারী জজের এখতিয়ার ভূক্ত সীমানার মধ্যে
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নটি অবস্থিত সেই সহকারী জজ এবং যেক্ষেত্রে অনুরূপ এখতিয়ার সম্পন্ন
একাধিক সহকারী জজ রহিয়াছেন সেই ক্ষেত্রে অনুরূপ কনিষ্ঠতম সহকারী জজ।
(ঙ) ‘‘গ্রাম আদালত’’ অর্থ ধারা ৫ এর অধীন গঠিত গ্রাম আদালত;
(চ) ‘‘চেয়ারম্যান’’ অর্থ গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান;
(ছ) ‘‘তফসিল’’ অর্থ এই আইনের তফসিল;
(জ) ‘‘দন্ডবিধি’’ অর্থ Penal Code,1860 (Act XLV of 1860);
(ঝ) ‘‘দেওয়ানী কার্যবিধি’’ অর্থ Code of Civil procedure,1908 (Act V of 1908);
(ঞ) ‘‘নির্ধারিত’’ অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত;
(ট) ‘‘পক্ষ’’ অর্থে এমন কোন ব্যক্তিঅন্তভূক্ত হইবে, যাহার উপস্থিতি কোন বিবাদের সঠিক মীমাংসার জন্যপ্রয়োজনীয় বলিয়া বিবেচিত হয়, এবং গ্রাম আদালত যাহাকে অনুরূপ বিবাদেরএকটি পক্ষ হিসাবে সংযুক্ত করে;
(ঠ) ‘‘ফৌজদারী কাযবিধি’’ অর্থ Code of Criminal procedure, 1898 (Act V of 1898);
(ড) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রনীত বিধি;
(ঢ) ‘‘সিদ্ধান্ত’’ অর্থ গ্রাম আদালতের কোন সিদ্ধান্ত।
৩। গ্রাম আদালত কর্তৃক বিচারযোগ্য মামলাঃ
(১) ফৌজদারী কার্যবিধি এবং দেওয়ানী কার্যবিধিতে যাহাই কিছুই থাকুক নাকেন তফসিলের প্রথম অংশে বর্নিত বিষয়াবলী সম্পর্কিত ফৌজদারী মামলা এবংদ্বিতীয় অংশে বর্নিত বিষয়াবলী সম্পর্কিত দেওয়ানী মামলা , অতঃপর ভিন্ন রকমবিধান না থাকিলে, গ্রাম আদালত কর্তৃক বিচার যোগ্য হইবে এবং কোন ফৌজদারী বাদেওয়ানী আদালতের অনুরূপ কোন মামলা বা মোকদ্দমার বিচার করার এখতিয়ার থাকিবেনা।
(২) গ্রাম আদালত কর্তৃক তপসিলের প্রথম অংশে বর্নিত কোন অপরাধের সহিত কোনমামলার বিচার্য হইবে না যদি উক্ত মামলার আমলযোগ্য কোন অপরাধের দায়ে দোষীসাব্যস্ত হইয়া ইতোপূর্বে গ্রাম আদালত কর্তৃক দন্ডপ্রাপ্ত হইয়া থাকেন, অথবাতপসিলের দ্বিতীয়াংশে বর্নিত বিষয়াবলীর সহিত সম্পর্কিত কোন মামলাও গ্রামআদালত কর্তৃক বিচার্য হইবে না, যদি-
(ক) উক্ত মামলায় কোন নাবালকের স্বার্থ জড়িত থাকে;
(খ) বিবাদের পক্ষগনের মধ্যে সম্পাদিত কোন চুক্তিতে সালিশের বা বিরোধ নিস্পত্তির বিধান থাকে;
(গ) সরকার বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা কর্তব্য পালনরত কোন সরকারী কর্মচারী উক্ত বিবাদের কোন পক্ষ হয়।
(৩) যে স্থাবর সম্পত্তির দখল অর্পন করিবার জন্য গ্রাম আদালত কর্তৃক আদেশপ্রদান করা হইয়াছে, ঐ স্থাবর সম্পত্তিতে স্বত্ব প্রতিষ্ঠা করিবার জন্য বাউহা দখল পুনরুদ্ধারের জন্য কোন মোকদ্দমা বা কার্যধারার ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এর বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে না।
৭। গ্রাম আদালতের ক্ষমতা।--
(১)এই আইনের ভিন্নরূপ কোন বিধান না থাকিলে ,গ্রাম আদালত তফসিলের প্রথমঅংশে বর্নিত অপরাধসমূহের ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তিকে কেবলমাত্র অনধিক পঁচিশহাজার টাকা ক্ষতিপূরন প্রদানের আদেশ প্রদান করিতে পারিবে ।
(২) গ্রাম আদালত তফসিলের দ্বিতীয় অংশে বর্নিত বিষয়বলীর সহিত সম্পর্কিতকোন মামলার অনুরূপ বিষয়ে তফসিলে উলিখিত পরিমান অর্থ প্রদানের জন্য আদেশপ্রদান করিতে বা সম্পত্তির প্রকৃত মালিককে সম্পত্তি বা উহার দখল প্রতার্পনকরিবার জন্য আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
৮। গ্রাম আদালতের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়া ও আপিল।--
(১) গ্রাম আদালতের সিদ্ধান্ত সর্বসম্মত বা চার-এক (৪ঃ ১) সংখ্যাগরিষ্ঠভোটে বা চারজন সদস্যের উপস্থিতিতে তিন -এক (৩ঃ ১) সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে গৃহীতহইলে উক্ত সিদ্ধান্ত পক্ষগনের উপর বাধ্যকর হইবে এবং এই আইনের বিধান অনুযায়ী কার্যকর হইবে।
(২) গ্রাম আদালতের সিদ্ধান্ত তিন-দুই (৩ঃ ২ ) সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে গৃহীতহইলে ,সংক্ষুদ্ধ পক্ষ,উক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহনের ত্রিশ দিনের মধ্যে, নির্ধারিতপদ্ধতিতে--
(ক) মামলাটি তফসিলের প্রথম অংশে বর্নিতকোন অপরাধের সহিত সম্পর্কিত হইলে , এখতিয়ার সম্পন্ন প্রথমশ্রেনীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আপিল করিতে পারিবে ;এবং
৯। গ্রাম আদালতের সিদ্ধন্ত কার্যকরকরন।--
(১) গ্রাম আদালত কোন ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরন প্রদানের জন্য অথবা সম্পত্তিবা উহার দখল প্রত্যার্পন করিবার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহন করিলে, উক্ত বিষয়েনির্ধারিত পদ্ধতিতে ,আদেশ প্রদান করিবে এবং তাহা নির্দিষ্ট রেজিস্টারেলিপিবদ্ধ করিবে।
(২) গ্রাম আদালতের উপস্থিতিতে উহার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দাবী মিটানো বাবদকোন অর্থ প্রদান করা হইলে অথবা কোন সম্পত্তি অর্পন করা হইলে গ্রাম আদালত ,ক্ষেত্রমত,উক্ত অর্থ প্রদান বা সম্পত্তি অর্পন সংক্রান্ত তথ্য উহাররেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করিবে।
(৩) যে ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরন প্রদানের জন্য গ্রাম আদালন কর্তৃক আদেশপ্রদান করা হয় এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উক্ত অর্থ প্রদান করা না হয় ,সেইক্ষেত্রে চেয়ারম্যান উহা ইউনিয়ন পরিষদের বকেয়া কর আদায়ের পদ্ধতিতে Public Demands Recovery Act, 1913 (Act III of 1913)এর অধীনে আদায় করিয়াক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে প্রদান করিবে।
(৪) যে ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরন প্রদান না করিয়া অন্য কোন প্রকারে দাবি মিটানসম্ভব, সেই ক্ষেত্রে উক্ত সিদ্ধান্ত কার্যকর করিবার জন্য বিষয়টি এখতিয়ারসম্পন্ন সহকারী জজ আদালতে উপস্থাপন করিতে হইবে এবং অনুরূপ আদালত ঐ সিদ্ধন্তকার্যকর করিবার জন্য এইরূপ ব্যবস্থা গ্রহন করিবে যেন ঐ আদালত কর্তৃকই উক্তসিদ্ধন্ত প্রদান করা হইয়াছে।
(৫) গ্রাম আদালত উপযুক্ত মনে করিলে তৎকর্তৃক নির্ধারিত কিস্তিতে ক্ষতিপূরনের অর্থ প্রদানের নির্দেশ দিতে পারিবে।
১০। সাক্ষীকে সমন দেওয়া ,ইত্যাদির ক্ষেত্রে গ্রাম আদালত ক্ষমতা্--
(১) গ্রাম আদালত যে কোন ব্যক্তিকে আদালতে হাজির হইতে এবং সাক্ষী দেওয়ারজন্য অথবা কোন দলিল দাখিল করিবার বা করাইবার জন্য সমন দিতে পারিবেঃ
তবে শর্ত থাকে যে-
(ক) দেওয়ানী কার্যবিধির ধারা ১৩৩ উপ-ধারা (১) এ যেব্যক্তিকে স্ব-শরীরে আদালতে হাজির হইতে অব্যাহতি দেওয়া হইয়াছে তাহাকেব্যক্তিগত ভাবে হাজির হইতে নির্দেশ দেওয়া যাইবে না।
(খ) গ্রাম আদালত যদি যুক্তিগতভাবে মনে করে যে,অহেতুকবিলম্ব, খরচ বা অসুবিধা ব্যতীত কোন ব্যক্তিকে হাজির করা সম্ভব নয়, তবেআদালত সেই সাক্ষীকে সমন দিতে বা সেই সাক্ষীর বিরুদ্ধে প্রদত্ত সমন কার্যকরকরিতে আগ্রহ্য করিতে পারিবে;
(গ) গ্রাম আদালতের এখতিয়ার বর্হিভূত এলাকায় বসবাসকারী কোন ব্যক্তির ভ্রমন ও অন্যান্য খরচ নির্বাহ বাবদ,আদালতের বিবেচনা মতে , পর্যাপ্ত অর্থ তাহাকে প্রদানের জন্য আদালতে জমা দেওয়া না হইলে, গ্রাম আদালতঐ ব্যক্তিকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য অথবা কোন দলিল দাখিল করিবার বা করাইবারজন্য নির্দেশ প্রদান করিবে না;
(ঘ) গ্রাম আদালত রাষ্ট্রীয় বিষয়াবলী সম্পর্কিত কোন গোপনীয়দলিল বা অপ্রকাশিত সরকারী রেকর্ড দাখিল করিবার জন্য কোন ব্যক্তিকে নির্দেশপ্রদান করিবে না বা সংশিষ্ট বিভাগের প্রধান কর্মকর্তার অনুমতি ব্যতীতঅনুরূপ গোপনীয় দলিল বা অপ্রকাশিত সরকারি রেকর্ড হইতে আহরিত কোন সাক্ষ্যপ্রদানের জন্য কোন ব্যক্তিকে নির্দেশ প্রদান করিবে না।
(২) কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন জারীকৃত সমন ইচ্ছাপূর্বক অমান্যকরিলে, গ্রাম আদালত অনুরূপ অমান্যতা আমলযোগ্য অপরাধ গন্যে অভিযুক্তব্যক্তিকে, তাঁহার বক্তব্য পেশের সুযোগ প্রদান সাপেক্ষে, অনধিক ৫০০/- টাকাজরিমানা করিতে পারি
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস